বৃহস্পতিবার, ০৯ জানুয়ারী ২০২৫, ০৮:৩৭ অপরাহ্ন

News Headline :
সভাপতির স্বৈরাচারী আচরন স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতিতে পাবনা শহর সমাজ সেবা কার্যালয়ের কার্যক্রম স্থবির হাবিপ্রবিতে আবাসন সংকট-হলে থেকেও অনাবাসিক অনেক ছাত্র রাজশাহী মহানগরীতে নাশকতা ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের অভিযোগে আ’লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদকসহ গ্রেফতার ১৪ রাজশাহীতে অর্ধশত বোতল ফেনসিডিল-সহ মাদক কারবারী গ্রেফতার সিরাজগঞ্জে দিগন্ত জুড়ে সরিষা ফুলে সেজেছে মাঠ, মধু সংগ্রহের প্রস্তুতি নিচ্ছে মৌ-চাষীরা রাজশাহীতে মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সম্পাদক মিথিলা-সহ গ্রেফতার ২৭ শ্যামনগরে হিংস্র মহিষের আক্রমণে ছয় জন গুরুতর আহত খুনিরা অধরা পাবনায় জুলাই আগষ্ট বিপ্লবে নিহত-আহতদের পরিবার আতংকিত শহীদ নিলয়ের পরিবার ভয়ে মামলা করেনি ভিসি প্রো-ভিসি নিজেরাই কোটার সুবাধে চেয়ারে বসে আছে-রাবি কর্মচারী পাবনায় চাঁদাবাজির মামলায় সাবেক ডিপুটি স্পিকার কারাগারে

শিবপুরের লটকন যাচ্ছে বিদেশে লাভবান কৃষকেরা

Reading Time: 2 minutes

মাহবুব খান, শিবপুর নরসিংদী:
নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার পাহাড়ি এলাকায় গাছে গাছে এখন শুধু সোনালী লটকনের সমারোহ। চাষীরা লটকন বিক্রিও শুরু করেছেন। এতে বাগান-চাষিদের মুখে হাসি ফুটে উঠেছে।এক সময়ের বনজ ফল হিসেবে পরিচিতি থাকলেও বর্তমানে লটকন লোভনীয় ফল হয়ে দেশে-বিদেশে বৃহৎ বাজার অর্জন করেছে। প্রতিনিয়ত বাড়ছে নতুন নতুন বাগান। ভাগ্য বদলেছে অসংখ্য বেকার যুবক-কৃষকের। কৃষি জমি ও বাড়ির আঙ্গিনায় চাষাবাদ হওয়া সুস্বাদু লটকন এখন দেশের সীমানা পেড়িয়ে রপ্তানি হচ্ছে বিদেশেও। দেশ-বিদেশের বাজারগুলোতে এর চাহিদাও রয়েছে ব্যাপকহারে। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে লটকন ফল উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছে বলে দাবি করছে লটকন আবাদকারী কৃষকরা। কম খরচ আর অল্প পরিশ্রমে ফলন ও মূল্য দুটোই ভালো হওয়ায় লটকন এখন চাষিদের কাছে অন্যান্য ফসলের তুলনায় অর্থনৈতিক ভাবে লাভজনক ফল হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। বিদেশ ফেরত বহু বেকার যুবকও লটকনের চাষ করে তাদের মুখে ফুটিয়েছে অর্থনৈতিক সাফল্যের হাসি। উপজেলা কৃষি অফিস-সূত্রে জানা যায়, এ বছর উপজেলার নয়টি ইউনিয়নের তিনটি ইউনিয়নে লটকন চাষ করা হয়েছে। জয়নগর, বাঘাব ও যোশর ইউনিয়নসহ আরো কয়েকটি গ্রামে ছোট-বড় মিলে প্রায় তিন হাজার লটকন বাগান রয়েছে। সরেজমিনে গিয়ে জয়নগর ইউনিয়নের কামরাব, সুজাতপুর,আজকিতলা,গিলাবের,ছোটাবন্দ,আষ্টআনি,বাঘাব ইউনিয়নের জয়মঙ্গল,বিরাজনগর ও যোশর ইউনিয়নের চৈতন্যা গ্রামের কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ১০-১৫ বছর আগেও লটকনের তেমন চাহিদা ছিল না। দামও ছিল কম। সেজন্য কেউ লটকনের আলাদা বাগান করার চিন্তা করত না। বর্তমানে টক-মিষ্টি সুস্বাধু এ ফলের চাহিদা ও মূল্য দুটোই বেড়েছে। এমনকি অন্যান্য ফল চাষের তুলনায় লটকনের ফলন বেশি হয় বলে চাষিরাও লাভবান হচ্ছে। গুণগত মান ভেদে লটকন মণপ্রতি তিন হাজার থেকে পাঁচ হাজার টাকা দরে পাইকারি বিক্রি করা হয়ে থাকে। পাইকাররা নিজেরাই বাগান থেকে লটকন ক্রয় করে থাকেন। এ উপজেলার পাহাড়ি এলাকায় উঁচু লালচে অম্লীয় মাটি এবং ছায়ামুক্ত আবহাওয়া থাকায় লটকনের ফলন ভাল হয়ে থাকে। ফলে লটকন চাষে কৃষকদের আগ্রহ বাড়ায় উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রতি বছরই চাষির সংখ্যা বাড়ছে।২০২১-২০২২ অর্থবছরে খরিপ মৌসুমে জেলায় ১ হাজার ৬৭৩ হেক্টর জমিতে লটনকনের বাগান করা হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি লটকন চাষ হয়েছে শিবপুরে। প্রতি কেজি লটকন স্থানীয় বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকা দরে। মরজাল,কামারটেক, চৈতন্য,সৃষ্টিগড়,বিরাজনগর ও উপজেলা সদরের বিভিন্ন বাজারে প্রতিদিন প্রায় ৫০ থেকে ৮০ লাখ টাকার লটকন বিক্রি করে থাকে। উপজেলার যোশর ইউনিয়নের চৈতন্যা গ্রামের লটকন চাষি ইমাম উদ্দিন সরকার বলেন, ‘আমার ৩০০ শতাংশ জমিতে লটকন বাগান রয়েছে। গত বছর ভালো ফলন হয়েছিল যার ফলে ১৭ থেকে ১৮ লাখ টাকা বিক্রি করেছিলাম। এবার ফলন কিছুটা কম হয়েছে। যেহেতু ফলন কম, আশা করি দাম বেশি পাব।জয়নগর ইউনিয়নের গিলাবের গ্রামের নজরুল মেম্বারের ছেলে রুবেল খন্দকার বলেন,আমাদের ১০০ শতাংশের একটি লটকন বাগান রয়েছে।প্রতিবছর এই বাগান থেকে ৫ থেকে ৬ লাখ টাকার লটকন বিক্রি করতে পারি। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ বিন সাদেক বলেন, এখানকার লটকন দেশের বাইরেও রফতানি হয়ে থাকে। গত বছর দুই থেকে তিন টন লটকন দেশের বাইরে রফতানি হয়েছে। এবার আরো বেশি চাহিদা রয়েছে। শিবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জিনিয়া জিন্নাত বলেন, ‘লটকন উৎপাদনে শিবপুরের মাটি খুবই উপযোগী। লটকন চাষে পরিশ্রম ও খরচ দুটোই কম। কৃষকরা লটকন চাষ করে তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটাচ্ছে। উপজেলায় লটকনের আবাদ আরো বাড়ানোসহ স্বাস্থ্যসম্মত ফল উৎপাদনের জন্য উপজেলা প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট বিভাগ কৃষকদের মাঝে প্রশিক্ষণসহ প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে।

Please Share This Post in Your Social Media

Design & Developed BY Hostitbd.Com